আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পাটগ্রাম মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম ওয়াজেদ আলীকে (৭২) গলা কেটে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবডাঙা এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের টংটিংডাঙা এলাকার মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টরের প্রধান সংগঠক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর সাবেক সংসদ সদস্য আবেদ আলীর ছোট ভাই। তিনি মুজিববাহিনীর সদস্য ছিলেন।
নিহতের পরিবার, হাসপাতাল ও স্থানীয়রা জানান, পাটগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবডাঙা এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা ওয়াজেদ আলীকে গলা কেটে পালিয়ে যায়। ওই সড়ক দিয়ে এক রিকশাচালক যাওয়ার সময় তাকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন এবং পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় পাটগ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের ভাগ্নে পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে খবর পেয়ে আমরা গলাকাটা অবস্থায় তাকে বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার কোনও শত্রু ছিল না। কেউ বা কারা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে তা আমরা অনুমান করে কিছু বলতে পারছি না। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এ হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে লালমনিরহাট জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নয়। মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী হত্যার ঘটনায় যদি অবিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হয় তাহলে কঠিন ও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন মুক্তিযোদ্ধারা।’
পাটগ্রাম পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সুইট বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী আমার চাচাশ্বশুর হন। আমার জানামতে তার কোনও শত্রু নেই।’
পাটগ্রাম মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান নীলু বলেন, ‘২০১৪ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এম ওয়াজেদ আলী অবসরে যান। তিনি রাজনীতিসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।’ তিনি অবিলম্বে ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।